আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে ইউক্রেন থেকে এখন অবধি চল্লিশ লাখের বেশি শরণার্থী ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছেন৷ আরো কয়েক লাখ শীঘ্রই তাদের সঙ্গে যোগ দিতে পারেন৷ ব্রাসেলসভিত্তিক একজন অর্থনীতিবিদ মনে করেন, ইউক্রেনীয় এই শরণার্থীদের পেছনে চলতি বছর ইইউর চার লাখ কোটি টাকার বেশি খরচ হতে পারে৷
ইউক্রেনের লাখ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ায় চলতি বছর ইইউর চার লাখ ত্রিশ হাজার কোটি টাকা খরচ হতে পারে বলে জানিয়েছেন ব্রাসেলসভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ব্রুগেল-এর অর্থনীতিবিদ জোয়েট দারবাস৷
ইইউ অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে চলতি বছর মোট ৫৭ লাখ ইউক্রেনীয় শরণার্থী আসবেন এবং তাদের দুই-তৃতীয়াংশই অন্তত নয় মাসের মতো রাষ্ট্রীয় সহায়তার উপর নির্ভরশীল থাকবেন, এমন ধারণা থেকে অর্থ খরচের এই হিসেব করা হয়েছে৷
ব্রুগেল ব্লগে দারবাস গত সপ্তাহে লিখেছেন, ইউক্রেনের সীমান্ত সংলগ্ন চারটি ইইউভুক্ত দেশ মূলত এই খরচ বহন করছে৷ তার হিসেবে অনুযায়ী পোল্যান্ড দুই লাখ দশ হাজার কোটি টাকা, রোমানিয়া ৫৪ হাজার কোটি টাকা এবং হাঙ্গেরি ও স্লোভেকিয়ার ৩৩ হাজার কোটি টাকা করে খরচ হবে৷
দারবাস মনে করেন, ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের যেহেতু অসমভাবে ইইউভুক্ত বিভিন্ন দেশে রাখা হচ্ছে, তাই এক্ষেত্রে খরচও সেভাবে ভাগাভাগি করে নেয়া উচিত৷ এজন্য একটি নতুন ইইউ ফান্ড গড়ার পক্ষে তিনি৷
ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের জন্য ইইউর এক লাখ কোটি টাকা
ব্রুগেলের এই অর্থনীতিবিদ জানিয়েছেন, ইইউ ইতোমধ্যে বিভিন্ন খাত থেকে অর্থ নিয়ে ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের পেছনে খরচ করছে৷ ইইউ শরণার্থীদের আশ্রয় দিচ্ছে এমন দেশগুলোকে ৪২ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে৷ পাশাপাশি আরো এক লাখ কোটি টাকা শরণার্থীদের পেছনে খরচ করছে৷ তবে টাকার এই অংক এখনো চার লাখ ত্রিশ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি পৌঁছায়নি৷
দারবাস অবশ্য ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদে খরচের বিষয়টি হিসেব করেননি৷ বিশেষ করে যুদ্ধ যদি দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে কী হবে সেটা তার হিসেবে উঠে আসেনি৷ তবে তিনি লিখেছেন, শরণার্থীরা যেহেতু কাজ করা শুরু করবেন, তাই রাষ্ট্রীয় অর্থের উপর তাদের নির্ভরতা কমবে৷ পাশাপাশি চাকুরিজীবীরা কর প্রদান করে সহায়তা করতে শুরু করবেন৷
এই অর্থনীতিবিদ মনে করেন, আগামী দশ বছরের হিসেব করলে শরণার্থীদের কারণে উল্টো ইইউ লাভবান হতে পারে৷ তবে বিষয়টি নির্ভর করছে এই শরণার্থীদের ধরন, মেধা, এবং বিভিন্ন দেশ তাদের কতটা সমাজের মূলধারায় একীভূত করতে পারবে তার উপরে৷ এক্ষেত্রে তাদের ভাষা শেখানো, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেয়া এবং মেধা অনুযায়ী সনদ প্রদানের ব্যাপারগুলো দ্রুত করতে হবে বলেও মনে করেন জোয়েট দারবাস৷
সূত্র- ইনফোমাইগ্রেন্টস।